কলকাতা, ৯ নভেম্বর : ভারত – বাংলাদেশ কাঁটাতারে পোঁতা মৌমাছির হুল? এই বাক্সেই লুকিয়ে বড় বিপদ! কিভাবে কাজ করবে মৌমাছির স্টিংগার? অনুপ্রবেশকারীদের চরম সর্বনাশ, পা মারানোর সাহস হবে না। হুল ফুটিয়ে চেহারা বদলে দেবে মোদীর পোষা মৌমাছি।
চোরাকারবারীদের মক্সদ ফেইল করবে মৌমাছির বেড়া। বিএসএফের মোক্ষম চাল, সীমান্তে মৌচাকের কামাল দেখবে ওপার বাংলা। মৌমাছি পুষছে ভারত। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই বাস্তব। হুল ফুটিয়ে চেহারা বদলে দিতে পারে একদল মৌমাছি। কিন্তু মোটিভ কী? ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত জুড়ে মানব পাচার, গবাদি পশু পাচার সহ যেকোন ধরনের নাশকতা রুখতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বিরাট ফাঁদ।
শুধুই কি তাই ভারত বাংলাদেশের মধ্যে অনুপ্রবেশ রুখতেও এটা এক অভিনব পদক্ষেপ। সীমান্ত এলাকায় অনেকটা জায়গা জুড়ে বসানো হচ্ছে মৌমাছির চাক। মৌমাছি প্রতিপালন এবং প্রজেক্ট মিশন মধু পরীক্ষা। এই প্রকল্পের আওতায় সীমান্তের বেড়ার কাছে কৌশলগতভাবে মৌমাছির বাক্স স্থাপন করা হয়েছে। মৌমাছির বাক্সগুলো মাটির সামান্য উপরে রেখে, তার কাছাকাছি মৌমাছি-বান্ধব ফল ও ফুলের গাছ বসানো হয়েছে। বাক্সগুলোকে প্রাকৃতিক ছায়া দেওয়া হয়, যাতে মৌমাছিদের আকর্ষণের একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। আর এই মৌচাকই অনুপ্রবেশকারী ও চোরাচালানকারীদের প্রতিরোধে বিরাট বড় অস্ত্র হয়ে উঠবে। মৌমাছির এই প্রজেক্টটাকে অনেক বড় করে দেখা হচ্ছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘ভাইব্রেন্ট ভিলেজ প্রোগ্রাম’ এর আওতায় সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে এই প্রকল্পটি চালু করা হয়েছে।
ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্ত অঞ্চলটি উভয় পাড়ের সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য এবং ঘন বনাঞ্চলের জন্য পরিচিত। স্থানীয় কৃষকরা ভীষণভাবে কৃষিকাজে নিযুক্ত থাকর ফলে সারা বছর ধরে মৌমাছির জন্য খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করবে। গ্রামবাসীদের মধ্যে সরিষা চাষ ও বিভিন্ন ফুলের গাছের রোপণে উৎসাহিত করা হচ্ছে, যা মৌমাছির খাদ্য সরবরাহে আরও সহায়তা করবে। এই প্রজেক্ট এর সাক্সেস নিশ্চিত করতে, গ্রামবাসীদের মৌমাছি পালনের সুফলতা সম্পর্কে একটা ধারণা দেওয়া হয়েছে।
বিএসএফ এর প্রশংসায় ভেসে যাচ্ছে ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত সীমান্ত এলাকায় এই উদ্যোগ আনার জন্য গ্রামবাসী এবং কৃষকরা বিএসএফ এর ভুয়সী প্রশংসা করছেন। আগামীদিনে গ্রামবাসীদের আরও বেশি করে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা। অলরেডি, সীমান্তের গ্রামবাসীদের মধ্যে মৌমাছি পালনের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সরঞ্জাম তুলে দেওয়া হয়েছে। সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি গ্রামীণ উন্নয়নেও বিএসএফ সর্বদা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, এটা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। মোদি সরকারের কড়া নজর রয়েছে।
প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, ভারত এবং বাংলাদেশ সীমান্তে ২০টি মৌমাছির বাক্স স্থাপন করা হচ্ছে! স্থানীয়রা তা দেখভাল করছেন এবং মধু সংগ্রহ করবেন। ফলে একদিকে যেমন তাঁরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন তেমনই অনুপ্রবেশ ঠেকানো অনেকাংশে সম্ভব হচ্ছে, হবে চোরা পাচারকারী এবং অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকাতে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর তরফে। তৎপর দুই দেশের সুরক্ষা বাহিনী। নেওয়া হচ্ছে একগুচ্ছ সদর্থক পদক্ষেপ। সেই জায়গা থেকে এই ‘মৌমাছির বেড়া’ অত্যন্ত কার্যকরি হতে পারে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। জানিয়ে রাখি, এই উদ্যোগ সফল হলে আগামীদিনে দক্ষিণবঙ্গেও সীমান্ত এলাকার মৌমাছি বাক্স প্রতিস্থাপন করার কথা ভাবনা চিন্তা করা হবে।
সূত্র : প্রথম কলকাতা
নিউজটি আপডেট করেছেন : Suprobhat Michigan